বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ
বাংলা সাহিত্যের তিন যুগের সময়সীমা মোটামুটি এইভাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে --
১) আদিযুগ (৯০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১২০০খ্রিষ্টাব্দ)
২) মধ্যযুগ(১২০১খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৮০০খ্রিষ্টাব্দ)
৩) আধুনিক যুগ (১৮০১খ্রিষ্টাব্দ থেকে আজ পর্যন্ত)
১) বাংলা সাহিত্যের আদিযুগের নিদর্শন
বাংলা সাহিত্যের আদিযুগের একমাত্র নিদর্শন 'চর্যাপদ '। এতে মূলত বৌদ্ধ সহজিয়া পন্থিদের
ধর্ম পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। এই ' চর্যাপদ ' এর ভাষার
অসমীয়া ও উড়িয়া ভাষার অনেক মিল লক্ষ্য করা যায়। চর্যাপদের ভাষা যে বাংলা তা সুনীতি কুমার
চট্টোপাধ্যায় তাঁর 'Origin and Development
of the Bengali language' গ্রন্থে বিভিন্ন
ভাষাতাত্ত্বিক দৃষ্টান্ত দিয়ে দেখিয়েছেন।
১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে চর্যাপদের পুথি আবিষ্কার করেন এবং
১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে প্রকাশ
করেন। এই গ্রন্থে চব্বিশ জন কবির নাম পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কয়েকজন কবির নাম হল, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, সরহপাদ, লুইপাদ, শবরপাদ
প্রভৃতি। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ৪৬ টি সম্পূর্ণ পদ এবং একটি পদের অংশ পেয়েছিলেন। মাঝের কয়েকটি পাতা পান নি।
'চর্যা' কথার অর্থ হল 'যা আচরণীয়'। তাই হল
'চর্যাপদ'। সাধকদের ভজন সংক্রান্ত তত্ত্বগ্ৰন্থ হল চর্যাপদ। সিদ্ধাচার্যরা তাদের গূঢ় রহস্যময় গোপন
তত্ত্বকথা রুপকের আড়ালে আভাসে ইঙ্গিতে ব্যক্ত
করেছেন। চর্যাপদে গুরু বাদের প্রভাব বিশেষ ভাবে
লক্ষ্য করা যায়।
চর্যাপদে তদানীন্তন বাংলাদেশের ভৌগোলিক প্রকৃতি, জল- হাওয়া, নদ- নদী প্রভৃতি স্থান পেয়েছে। তাই চর্যাপদ থেকে যেমন বাংলা ভাষার আদি রুপ
জানা যায়, তেমনি তৎকালীন বাংলার সমাজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি।
Nice
ReplyDelete